রানু ও আসিফের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে তিন মাস, আসিফ একজন ব্যাঙ্কের অফিসার, ধানমণ্ডিতে দোতলা একটি বাড়ি কিনেছে আসিফ, রানুর সবচেয়ে প্রিয় সখ উপন্যাস পড়া, হুমায়ুন আহমেদ স্যারের উপন্যাস গুলো তার খুবই পছন্দ, রীতিমত তার একজন ভক্তও বলা যায়, আসিফ যখন ব্যাঙ্কে যায় , তখন সে উপন্যাস পড়তে থাকে, হুমায়ুন আহমেদ স্যারের সবচেয়ে বেশি প্রিয় তার হিমু আর দেবীর রানু চরিত্রটি, যদিও হিমু চরিত্রটি ছেলের চরিত্র, তারপরেও এটা তার খুব ভাল লাগে, যেমন মাঝে মাঝেই সে আসিফকে হলুদ পাঞ্জাবি গিফট করে, তাঁকে উৎসাহ দেয়, তবে হলুদ রঙ টা এমনিতেই রানুর পছন্দ এইজন্য প্রায়ই সে হলুদ শাড়ি পরে, ইতিমধ্যে অনেক বই পড়া হয়ে গেছে, এখন আবার শুরু হয়েছে ইউটিউবে হুমায়ুন আহমেদ স্যারের আগের নাটক গুলো দেখা, যেমন, বহুব্রিহি, অয়োময়, কোথাও কেউ নেই, আজ রবিবার ইত্যাদি
রানুর আজ তার একটি রুম সাজিয়েছে নিজের মনের মতো করে, ঘরটি পুরো হলুদ রঙ দিয়ে সাজানো, এমনকি সেই ঘরের সো পিস গুলো সব হলুদ রঙের, সব শ্রদ্ধা যেন এই মহান উপন্যাসিক হুমায়ুন আহমেদ স্যারের জন্য,
যে বাড়িটি আসিফ কিনেছে খুবই সস্তা দামে পেয়েছিল, আগের মালিক এই বাড়ি বিক্রি করে গুলশানে চলে গেছে, তবে আগের মালিকের একমাত্র মেয়ে বাড়ির ছাঁদ থেকে পা পিছলে নিচে পরে মৃত্যু হয় আর কাকতালিও ভাবে তার নামও ছিল রানু,বই পড়তে পড়তেই সে ছাদ থেকে পরে মারা যায়, ঘটনাটা সে বাড়ির দারোয়ানের কাছ থেকে জানতে পারে,
রানু আজ দুপুরে ছাদ থেকে ধানমণ্ডি লেক টা ঘুরে ঘুরে দেখছিল, হঠাৎ তার মনে হল কেও একজন পাশ থেকে যেন ফিস ফিস করে বলছে “আমি রানু বলছি ” সে চমকে উঠে, ভাল করে চারপাশটা দেখে নেয় কিন্তু কাউকে দেখতে পায় না, সে বেশ বুঝতে পারল তার হ্যালুসিনেশন হচ্ছে,কারন রানুর ওই ঘটনা জানার পরই এরকম হল, রানু ভেবে দেখে “সে মৃত রানুকে নিয়ে বেশি আপসেট ছিল হয়ত সেটাই মনে গেথে গেছে, তখন সে নেমে চলে যায় ,
কিছুদিন পরের ঘটনা কোন এক শীতের দিনে সকাল ১১ টায় ছাদে বসে বসে রানু বই পড়ছে । আচমকা আবারো শুনল ফিসফিস করে কে যেন বলছে “আমি রানু বলছি” রানু চমকে উঠে চিৎকার করে, এমন সময় দারোয়ান শফিক এসে দ্রুত তাঁকে ধরে ফেলে, অদ্ভুত রকমের মানুষ দারোয়ান শফিক, গলায় ছোট একটা কালো কাপরের বালিসের মতো করে কালো কাইতুন সুতা দিয়ে ঝুলান তাবিজ আর দুই হাতের কব্জিতে দুটো টিনের তৈরি তাবিজ পড়া, চুল গুলো বেশ লম্বা, শফিক বলে “ম্যডাম আপনি তো এখনি নিচে পইড়া যাইতেন, সময় মতো আমি আইসা পরছি, আমাদের আগের রানু ম্যডামের মতো আপনিও তো গেছিলেন ” রানু শফিককে আচমকা দেখে বিকট চিৎকারে করে বেহুস হয়ে যায়
চলবে ۔۔۔۔۔۔
মোহাম্মদ সোহেল রানা