সবাইকে বসন্তের শুভেচ্ছা

1
466
** সবাইকে বসন্তের শুভেচ্ছা**
কাক-মা জানত তার বাসায় কোকিলের ডিম।
সে চুপিসারে কোকিল-মাকে তার বাসা থেকে বেরোতে দেখেছিলো। বাসায় ফিরে সে গুণে দেখেছিলো, তার বাসায় ডিমের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটেছে।
বিষয়টি বুঝলেও সে কিচ্ছুটি বলল না কাউকে।
ধৈর্য ধরে ডিমে তা দিল, বাচ্চা হলে তাকে পোকাটা-মাকড়টা খাইয়ে বড় করল। সে জানত, এই অবোধ শিশু একদিন ভিনস্বরে গেয়ে উঠবে গান, আলাদা করে নেবে নিজেকে।
সবাই ভাবল, তার মত বোকা আর কেউ হয় না।
তাকে বারবার বোকা বানিয়ে যায় কোকিল-মা। দুনিয়ার কাছে বোকা হয়েও সে চুপ করেই থাকল, নইলে কি হত কোকিলের ছানাগুলোর?
জন্মই যে হত না তাদের ! জন্ম না হলে কেই বা গাইত বসন্তদিনের অমন বন-মাতানো মন-মাতানো গান ?
মা যে তাদের উড়নচণ্ডী ! বাসা বানানোর ধৈর্য নেই, সারাক্ষণ শুধু উড়ে-উড়ে সুরে-সুরে ঘুরে-ঘুরে বেড়াচ্ছে।
কোকিল মাকে অবশ্য দোষ দেয় না কাক-মা। সবাই কি আর একরকম হয়?
সে নিজে কি অমন গাইতে পারবে কোনদিন ?
তাছাড়া সবাইতো আর সংসারী হয় না।
তার ছানাদের বড় করে দিতে কোনও আপত্তি নেই কাক-মায়ের। এক-একজন এক-এক ধারার বলেই না এত রঙ, এত রূপ, এত সুর এই জগতটায় !
কোনও এক বসন্তদিনে নিজের বাসায় বসে দূরে কোনও কোকিলের কুহুরব শুনে স্বরটা কেমন চেনা চেনা লাগে কাক-মায়ের। খুশিতে তৃপ্তিতে চোখ বুজে আসে। মনে মনে কত যে আশীর্বাদ সে করে তাদের! আহা, বাছারা ! বেঁচে থাকো। কাক-মাকে নাই বা মনে করলে, মধুর গানে ভুবনখানি ভরে রাখো।
দুনিয়ার সবাই তাকে বোকা ভাবলেও একজন কিন্তু ঠিকই চিনেছে তাকে। নইলে কেনই বা সে ডিম পাড়বার সময় হলেই বারবার সেই কাক-মায়ের বাসাতেই ফিরে ফিরে আসে ?
“”””বসন্তে কোকিলের গান শুনে সবাই মুগ্ধ হ‌ই কিন্তু এর পিছনে কাকের আত্মত্যাগের কথা কেউ মনে করি না”””

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here