“হা করে তাকিয়ে দেখছো কি? তাকিয়ে না থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাও আমাকে।” – কপট রাগ দেখিয়ে বলে মধুমিতা তার স্বামী শৈবাল কে।
“একদম ভুল হয়ে গেছে মধু। জন্মদিনের একরাশ শুভেচ্ছা জানাই তোমাকে।” – শৈবাল বলে ওঠে তাড়াতাড়ি।
দৌড়ে রান্নাঘর থেকে গিয়ে নিয়ে আসে মধুমিতার জন্য আনা তার জন্মদিনের কেকটা। চকোলেট কেক খুব প্রিয় মধুমিতার। তার সাথে নিয়ে আসে একগাদা লাল গোলাপের তোড়া। এই লাল গোলাপও যে মধুমিতা খুব ভালোবাসে।
মধুমিতা কে আজকে লাগছে ভীষণ সুন্দর। কে বলবে যে আজকে বিয়াল্লিশ বছরে পা দিল সে। একই রকম দেখতে রয়ে গেছে তাকে। সেই রকমই মিষ্টি, সুন্দরী আছে সে। তার বয়স যেন থমকে গেছে সেই পঁচিশ বছরেই। আর সেটা হবে নাই বা কেন? শৈবাল যে তাকে একই রকম রাখার জন্য অনেক কাট খড় পুড়িয়েছে। কম টাকা পয়সা খরচ হয়নি শৈবালের এটার জন্য। তবে ফলাফলে শৈবাল ভীষণ খুশি। তার খরচ করাটা সার্থক হয়েছে।
মধুমিতার পঁচিশতম জন্মদিনে নিজের হাতে তার গলা টিপে খুন করে শৈবাল তাকে। তার ভালোবাসার মানুষের বয়স যেন না বেড়ে যায়, সে যেন বুড়ি না হয়ে যায়, সব সময় যেন এমন সুন্দরী থাকে, শৈবাল কে ছেড়ে যেন না যায় কোনোদিন,মৃত্যু যেন তাকে ছুঁতে না পারে – এইসবই সারাক্ষন মাথায় ঘুরতো শৈবালের। এই সব ভাবতে ভাবতে ক্রমে শৈবাল তার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে থাকে। হয়ে ওঠে যেন জীবন্ত ত্রাস। দুর্বিষহ করে তোলে মধুমিতার জীবন। তাও মধুমিতা তাকে ছেড়ে যায়নি। নিজের ভালোবাসা দিয়ে আটকে রাখতে চেয়েছিল শৈবাল কে। সে বিশ্বাস করতো যে শৈবাল অফুরন্ত ভালোবাসা পেলে আবার সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু এই ধারনাটাই তার সর্বনাশ করলো। খুন হলো সে শৈবালের হাতেই নিজের জন্মদিনের রাতে। আর সেই সঙ্গে শৈবাল হারালো নিজের সর্বসত্তাকে। যেটুকু সদ্বিবেচনা ছিল তার সেটাও লোপ পেল। এক অলীক কল্পনার দুনিয়ায় বাস করতে থাকলো সে এরপর থেকেই – যেখানে মধুমিতা বেঁচে আছে তার রূপ যৌবন নিয়ে।
শৈবালের এই অবস্থা দেখে, তার আত্মীয় স্বজনরা তাকে মেন্টাল এসাইলামে ভর্তি করে দেয়। সেইখানে প্রতি বছর শৈবাল ২১শে জুন সেলিব্রেট করে মধুমিতার শুভ জন্মদিন, তার সুন্দরী মধুমিতার সাথে – নিজর মনের অলীক স্বপ্নের জগৎ এ।
অমৃতা বিশ্বাস সরকার
ভারত , কলকাতা
ছোট তবে চমৎকার একটি গল্প
tadalafil 2.5
শুভ জন্মদিন | The Best Magazine in The World