আমি রানু বলছি | তৃতীয় পর্ব

0
210

পরের দিন সন্ধায় রানু আবার যায় ছাঁদে , আজ সন্ধায় রানু সেজেছে দারুন সুন্দর সাজে , হলুদ হাতা কাটা ব্লাউজ এর সাথে নীল শাড়ি কুঁচি করে পরানো , সুন্দর টীপ কপালে , চুল গুলো হাওয়ায় ভাসছে , অপরূপ লাগছে আজ রানুকে , বাড়িতে রানু একা , আচমকা তার কাছে মনে হল তার শরীর ভার হয়ে আছে , তার গায়ে শক্তি বেড়ে গেছে , সে বলতে থাকে “আমি রানু বলছি , আমি রানু বলছি , আমি সেই রানু , তোকে শেষ করতে এসেছি” এটা বলে রানু বেহুস হিয়ে পরে , জ্ঞান ফিরে আসার পর সে দেখে সে তার বিছানায় ,পাশে আসিফ তার মুখে পানি দিচ্ছে ,আর বলছে তোমাকে আমি ঘরে না পেয়ে ছাদে যাই , আর দেখি তুমি জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে রয়েছ ,

একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে , এটা আসিফকে চিন্তায় ফেলে দেয় , আসিফ সিদ্দান্ত নেয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এর কাছে রানুকে নিয়ে যাবে

আসিফ রানুকে দুইদিন পর নিয়ে যায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এর কাছে , মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর সিনহা , বয়স ঃ ৫০ ছুই ছুই , উস্ক খুস্ক চুল , কাঁচা পাকা ছোট ছোট দাঁড়ি , কিছুটা এলোমেলো , তার চেম্বারটি ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে , ডক্টর সিনহা রানুকে অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করে , সব কিছু শুনে তিনি তাদের বলেন “ রানুর ঘুমের প্রয়োজন , কারন ঘুম না এসে রাত জাগার ফলে তার অবচেতন মন ব্রেনে চাপ ফেলে , আর সে সারাদিন যা চিন্তা করে সেটা মস্তিস্কে গ্রহন করে , আর সেই মস্তিস্ক কাজ শুরু করে দেয় তার কাল্পনিক জগতের প্রতি , পুরাই তার কল্পনা , কারন সে সারদিন একা থাকে , তিনি বুঝালেন “ আমাদের মস্তিস্ক এক বিশাল রহস্য , আপনি তাঁকে যা বোঝাবেন সে সেটাই বুঝবে , ধরুন , আপনি রাত ১২ টা পর্যন্ত ভুতের ছবি দেখলেন , তারপর আপনার মনে ভয়ের সৃষ্টি হল , আচমকা একটি শব্দ পেলেন , আপনার মস্থিস্ক কাজ করা শুরু করল আপনার কল্পনার জগতে , কারন ঐযে একটু আগেই ভুতের ছবি দেখেছেন , এখন আপনার সেই অবচেতন মনকে নিয়ে খেলা করবে আপনার ব্রেন, শব্দটা যেটা এসেছিল সেটা কোন বিড়াল যাবার পথে কিছু ফেলে দেয় , আর সেটা শুনে আপনার মনে হয় , অলৌকিক কিছু সেখানে আছে , আসলে ব্যপারটা তা নয় , আপনার ব্যপারেও সেটা হয়েছে , আপনার ঘটনা গুলো ঘটছে তখন থেকেই যখন আপনি শুনেছেন , রানু নামে কোন এক মেয়ে এই ছাঁদ থেকে পরে মারা গেছে , সেটা আপনার মনে প্রভাব ফেলেছে ,আর সেই প্রভাবিত মন কে নিয়ন্ত্রন করছে আপনার অজান্তে আপনার ব্রেইন , আসলে রানু নামের সেই মেয়েটির অস্তিত এখন পৃথিবীতে নেই , সেটার অস্তিত্ত শুধু আপনার কল্পনা , আসিফ বলল “স্যার সে অনেক ভৌতিক উপন্যাস পরে , সেখান থেকে কি কোন সমস্যা হতে পারে? ” ডক্টর সিনহা বললেন ,আমিও কিন্তু উপন্যাস পড়তে পছন্দ করি , আপনার মতো আমিও হুমায়ুন আহমেদ স্যারের ফ্যান , , খুবই বড় মাপের মানুষ তিনি, উপন্যাস পড়া খুবই ভাল , ব্রেইন শার্প হয় , বুদ্ধি বাড়ে তবে আপনার এই ঘটনাটির সাথে উপন্যাস এর কোন সম্পর্ক নেই , তাহলে তো আমারো এই রকম সমস্যা হবার কথা ছিল , তাই নয় কি ? ডক্টর সিনহা মুচকি হসে বললেন , “ আসিফ সাহেব আপনিও উপন্যাস পড়া শুরু করুন , দেখবেন ভাল লাগছে ”

                                                                                                         মোহাম্মদ সোহেল রানা

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here